বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা:রাজ্য বিজেপির অন্দরেও পৌঁছে গেল করোনা। সংক্রমিত হয়েছেন স্বয়ং সাংসদ তথা অভিনেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়। শুক্রবার এ কথা তিনি নিজেই জানিয়েছেন টুইট করে। আপাতত হোম আইসোলেশনেই থাকছেন তিনি। পাশাপাশি এদিন রাজ্যে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা পেরিয়ে গেল ২০ হাজারের গণ্ডি।
বেশ কয়েকদিন ধরেই লকেট চট্টোপাধ্যায়ের মধ্যে করোনার একাধিক উপসর্গ দেখা দেয়। জ্বর–সর্দিতে কাহিল ছিলেন। ব্যাপারটা নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় তিনি বাড়ির বাইরে বের হওয়া বন্ধ করে দেন। সেই সঙ্গে ব্যক্তিগত চিকিৎসকের পরামর্শে নমুনাও পাঠান পরীক্ষার জন্য। রিপোর্টে তাঁর কোভিড–১৯ ধরা পড়ে। নিজের করোনা সংক্রমণের কথা টুইটে জানিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘এখন সব ঠিক আছে। সময় মতো সকলকে সব কিছু জানাব। আপনারাও সকলে ভালো থাকুন।’ এদিকে, রাজ্য বিজেপির বেশ কয়েকজন নেতাও এখন অসুস্থ রয়েছেন। তাঁদের কারও কারও জ্বর, সর্দি, কাশি রয়েছে। তাঁরা সকলেই বাড়িতে বিশ্রামে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, চিকিৎসকদের বক্তব্য, এখন যেহেতু আবহাওয়ার পরিবর্তন হচ্ছে। বেশ গরম পড়েছে। আবার মাঝে মাঝে বৃষ্টিও হচ্ছে। তাই ঠান্ডা–গরম থেকেও জ্বর বা সর্দি–কাশি হতে পারে। তবে বিষয়টিকে উপেক্ষা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। প্রয়োজনে নমুনা পরীক্ষাও করিয়ে নেওয়া উচিত। অন্যদিকে, কলকাতায় বিজেপির রাজ্য অফিসের কাছে একটি বাড়িতে করোনা সংক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছে। তাই আপাতত অনেক নেতাই রাজ্য অফিস এড়িয়ে চলছেন। পাশাপাশি আপাতত আন্দোলন–সংক্রান্ত কোনও কর্মসূচিও নিচ্ছে না রাজ্য বিজেপি। কারণ হিসেবে অনেকেই জানিয়েছেন, ওই কর্মসূচিগুলিতে সামাজিক দূরত্ব বিধি মানা অনেক সময়ই সম্ভব হচ্ছে না। তাই সেইসব কর্মসূচি স্থগিত রাখা হচ্ছে।
এদিকে, রাজ্যে করোনা সংক্রমণ ছাড়িয়ে গেল ২০ হাজারের গণ্ডি। শেষ ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৬৬৯ জন। ফলে রাজ্যে মোট করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৪৮৮ জন। এদিন যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কলকাতার রয়েছেন ১৮২ জন। ফলে শুধু কলকাতা শহরেই সংক্রমিতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৬২২ জন। এদিন প্রাণ হারিয়েছেন ১৮ জন। ফলে রাজ্যে করোনা–মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭১৭ জন। তবে আশার আলোও যথেষ্ট রয়েছে। এদিন সুস্থ হয়েছেন ৫৩৪ জন। সুস্থদের মধ্যে কলকাতার রয়েছে ১০২ জন। এখনও অবধি মোট সুস্থ হয়েছেন ১৩ হাজার ৫৩১ জন। ফলে সুস্থতার হার দাঁড়িয়েছে ৬৬.২৩ শতাংশ।
এ ছাড়া, কলকাতার বিধাননগরে করোনা সংক্রমণের জেরে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের জোনাল অফিস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, ওই অফিসের ১৯ জন কর্মীর নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট একই সঙ্গে পজিটিভ এসেছে। ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। কোনও ঝুঁকি না নিয়ে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জোনাল অফিসটি বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি পার্ক স্ট্রিটের প্রশাসনিক অফিসও আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে আংশিক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে মূল অফিস সমৃদ্ধি ভবন।